ডি.ডি.এস সমাজে অবহেলিত ও উপেক্ষিত পথ শিশুদের জন্য “আলোকিত শিক্ষলয়” নামে একটি স্কুল পরিচালনা করছে
সমাজের উন্নয়ন তখনই সম্ভব যখন সমাজের প্রতিটি মানুষ সমান অধিকার ও সুযোগ পায়। কিন্তু আমাদের চারপাশে এমন একটি শ্রেণি রয়েছে যারা সমাজে অবহেলিত, উপেক্ষিত এবং মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত। এর মধ্যে পথশিশুরা অন্যতম। এরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি—সবক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকে। এই বঞ্চিত শিশুদের জন্য কাজ করছে প্রতিবন্ধি উন্নয়ন সংগঠন (ডি.ডি.এস)। সমাজে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নের পাশাপাশি তারা পথশিশুদের শিক্ষার আলো ছড়াতে “আলোকিত শিক্ষলয়” নামে একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
আলোকিত শিক্ষলয়ের উদ্দেশ্য
আলোকিত শিক্ষলয়ের মূল লক্ষ্য হলো পথশিশুদের শিক্ষা, নৈতিক মূল্যবোধ, এবং সুস্থ জীবনযাপনের সুযোগ প্রদান করা। এরা রাস্তায় বড় হয়, অপরাধ ও মাদকাসক্তির ঝুঁকিতে থাকে। ডি.ডি.এস এই শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা ব্যবস্থা করছে। শুধু প্রাথমিক শিক্ষা নয়, বরং চরিত্র গঠন, স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং জীবনমুখী শিক্ষাও প্রদান করা হয়।
শিক্ষা ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য
-
বিনামূল্যে শিক্ষা: দরিদ্র ও পথশিশুরা কোনো খরচ ছাড়াই পড়াশোনা করার সুযোগ পায়।
-
পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবা: শিশুদের পুষ্টিকর খাবার, স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়।
-
অভিভাবকহীন শিশুদের মানসিক উন্নয়ন: তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সৃজনশীল কার্যক্রমের ব্যবস্থা রয়েছে।
-
প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা: শিশুদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ এবং মৌলিক প্রযুক্তি জ্ঞান দেওয়া হয় যাতে তারা সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে।
ডি.ডি.এস-এর ভূমিকা
ডি.ডি.এস দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবন্ধী ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে কাজ করছে। ২০০৬ সাল থেকে শুরু হওয়া এই সংগঠনটি সমতা, মানবাধিকার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, নারীর ক্ষমতায়ন, এবং আর্থিক সহায়তা উল্লেখযোগ্য। “আলোকিত শিক্ষলয়” প্রকল্পের মাধ্যমে তারা পথশিশুদের সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
উপসংহার
একটি উন্নত, সুশিক্ষিত ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে পথশিশুদের পিছিয়ে রাখা যাবে না। “আলোকিত শিক্ষলয়” পথশিশুদের জন্য আশার আলো। এমন উদ্যোগ শুধু শিশুদের জীবন আলোকিত করছে না, বরং গোটা জাতিকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের সবার উচিত ডি.ডি.এস-এর মতো মানবিক কাজকে সমর্থন করা এবং সমাজের সকল সুবিধাবঞ্চিত শিশুর পাশে দাঁড়ানো।